নয়াকৃষি: বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়েছেন আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা। এই তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। স্থানীয় কৃষি বিভাগের আশা, জেলার বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন বার্তা বয়ে আনবে এই বারোমাসি তরমুজ।
সোমবার (১০ অক্টোবর) সকালে জেলার সদর উপজেলার আমনুরা রোডের জামতলা বাজার এলাকার বাবু আলীর আমিরা এগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে মালচিং পেপারের নিচে রোপণ করা বীজ থেকে চারা গজে দুপাশে দেওয়া বাঁশের তৈরি মাচার ওপর বড় হয়েছে গাছ। গাছে দুলছে ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া জাতের সুস্বাদু তরমুজ। যাতে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য ব্যবহার করা হয়েছে এক ধরনের নেটের ব্যাগ। এক একটি তরমুজের ওজন প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত। যা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে।
তরমুজ চাষি বাবু আলী বলের, ‘তিনমাস আগে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজের ১২ কাঠা জমির একটি প্রদর্শনী দিয়েছিল। এজন্য চাষ করেছিলাম এই বারোমাসি তরমুজ। কিন্তু বীজ রোপণের দুই মাসের মধ্যেই সব তরমুজ সুমিষ্ট হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। পরে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে প্রায় ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, এটা অন্তত লাভজনক ফল। তাই ফের ১৫ কাঠা জমিতে চাষ করেছি। এবার প্রায় লাখখানেক টাকা পাবো বলে আশা করছি। আগামী বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কামরুল হাসান নামের আরেক তরমুজ চাষি বলেন, মাত্র ৬০ দিনে কানিয়া তরমুজ বিক্রির উপযোগী হচ্ছে। এতে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি। অন্যান্য বছর যে তরমুজগুলো চাষ করতাম তা বছরে মাত্র একবার চাষ করা যেতো। আমার জমিতে এখন সারাবছর তরমুজ পাওয়া যায়। এ বছর চার মাসে দুবার এ তরমুজ চাষ করে ১৫ কাঠা জমিতে প্রায় দুই লাখ টাকা পেয়েছি। খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, পাঁচ মাস আগে একটি প্রকল্পের আওতায় ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করছেন কৃষকরা। এ তরমুজ চাষ করে ৬০ দিনে এক বিঘাতে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করেছেন অনেকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেলায় খুব বেশি জমিতে চাষ হয়নি এ জাতের তরমুজ।
তিনি বলেন, আশা করছি আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে পুরো জেলায় চাষ হবে এ তরমুজ। যেহেতু অসময়ে পাওয়া যাচ্ছে তাই দামও বেশ ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।