নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর ফসল বিভাগের বিজ্ঞানী ড. কুতুবউদ্দিন মোল্লা বলেছেন, জিনোম এডিটিং ব্যবহার করে সিস্টিক ফাইব্রোসিস, হান্টিংটন’স ডিজিজ এবং থ্যালাসেমিয়া সহ বিভিন্ন জিনগত রোগের চিকিৎসা ভারত বা বাংলাদেশেই করা সম্ভব। HIV, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মার মতো সংক্রামক রোগের সহজ সাবলীল সমাধান হতে পারে জিনোম ইডিটিং। বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই) কর্তৃক আয়োজিত “মানব কল্যাণে জিনোম এডিটিং: কৃষি থেকে স্বাস্থ্য সেবা পর্যন্ত” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. কুতুব উদ্দিন মোল্লা বলেন, জিনোম এডিটিং জিন থেরাপি বা জিন প্রযুক্তি নামেও পরিচিত, জীবন্ত কোষের ডিএনএ পরিবর্তন করার একটি ক্ষমতাধর পদ্ধতি। এটি বিজ্ঞানীদের নির্দিষ্ট জিনগুলিকে সংশোধন করতে, মুছে ফেলতে অথবা নতুন জিন যোগ করতে সহযোগিতা করে। ফসলকে ভাইরাস, ছত্রাক, পোকামাকড় এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে রক্ষা, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, কীটনাশকের ব্যবহার কম, এইসব কিছুই জিনোম ইডিটিং (ক্রিস্পার কাস) ব্যবহার করে করা সম্ভব। ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে আধুনিক ও যুগোপযোগী আরো অত্যাধুনিক পদ্ধতি জিনোম এডিটিং এর মাধ্যমে করা যেতে পারে।
আইবিজিই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক প্রফেসর ড. মো: তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, জিনোম এডিটিং শুধুমাত্র কৃষি ক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসেনি বরং রোগ নির্ণয় ও বিশ্বব্যাপী গবেষণার নতুন নতুন দিক উন্মোচন করেছে। তিনি বাংলাদেশকেও এই আধুনিক গবেষণার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন। সেই সাথে বাংলায় লিখিত তার বাংলাদেশের প্রথম বই “জিনোম ইডিটিং” সর্বস্তরের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে পড়ার জন্য আহবান করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন এই বই পড়লে জিনোম ইডিটিং বাংলাদেশের মানুষের কাছে সহজ উপলুব্ধ ও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল বাসেত মিয়া, আইবিজিইর পরিচালক প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর ড. এ. কে. এম আমিনুল ইসলাম (জিপিবি); প্রফেসর ড. মো. আহসানুল হক স্বপন (ইএনটি); প্রফেসর ড. ফাতেমা খাতুন (ইএনটি); প্রফেসর ড. মো. মোরশেদুর রহমান (ডিপিএস); প্রফেসর ড. মো. মহিউদ্দিন (সিবিটি); প্রফেসর ড. শাহ মোঃ নাইমুল ইসলাম (আইবিজিই); সহযোগী অধ্যাপক ও প্রধান হায়দার ইকবাল খান (সিবিটি); সহযোগী অধ্যাপক ডিপালি রানী গুপ্তা (আইবিজিই); সহযোগী অধ্যাপক ও প্রধান ড. নুরে আলম সিদ্দিকী (বিএমবি); সহযোগী অধ্যাপক ও প্রধান ড. আফসানা হোসাইন (পিএলপি); সহকারী অধ্যাপক ড. আফজাল শেইখ(বিএমবি) সহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, গবেষক, পিএইচডি ফেলো, মাস্টার্স ও অনার্স শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সেমিনার শেষে ড. কুতুব উদ্দিন মোল্লা আইবিজিইর ল্যাব ও গবেষণা কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখেন এবং চলমান গবেষণার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আইবিজিইর অত্যাধুনিক ল্যাবকে বিশ্বমানের এবং পৃথিবীর প্রথম সারির ল্যাবগুলোর একটি বলে মন্তব্য করেন।