নয়াকৃষি: সরিষা বাংলাদেশের প্রধান ভোজ্য তেল ফসল। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে এর চাষাবাদ করা হয় এবং প্রায় আড়াই লক্ষ টন তেল পাওয়া যায়। বিভিন্ন জাতরে সরিষার বীজে প্রায় ৪০-৪৪% তেল থাকে। খৈলে প্রায় ৪০% আমিষ থাকে। তাই খৈল গরু ও মহিষের জন্য খুব পুষ্টিকর খাদ্য। সরিষা চাষাবাদের জন্য নিম্নোক্ত বিষয় গুলো জানা জরুরি।
চাষ পদ্ধতি
জমি ও মাটি:
এঁটেল দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ এবং দো-অঁশা মাটিতে সফল ও অগ্রণী জাতের সরিষা ভালো হয়। তবে এ জমিতে পানি সরানোর সুব্যবস্থা থাকতে হবে।
জমি তৈরি পদ্ধতি
জমিতে ৪-৬টি চাষ মই দিয়ে তৈরি করতে হবে৷ চাষ কম হলে সরিষা বীজের অঙ্কুরোদগমে বিঘ্ন ঘটে৷ মাটির জো অবস্থায় জমি চাষ দিতে হবে৷ এতে মাটিতে ঢেলা থাকবে না, মাটি সমতল হবে৷ জমি চাষ করর সময় আগাছা ভালোভাবে বাছাই করতে হবে, যাতে ফসলে আগাছার প্রকোপ কম হয়৷ সরিষা জমির চাষ ১০-১২ সেন্টিমিটার গভীরে হওয়া দরকার৷ সরিষা জমিতে চাষ করার ফাঁকে ফাঁকে রোদ লাগতে হবে৷ পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ দিলে ২-৩টি চাষই যথেষ্ট, তবে ভালোভাবে চাষ-মই দিয়ে জমি সমতল করতে হবে৷
বীজ বপন পূর্বে করণীয়:
বীজ বপনের পূর্বে ভিটাভেক্স-২০০ অথবা ক্যান্টন দিয়ে (২-৩ গ্রাম ছত্রাক নাশক/ কেজি বীজ) বীজ শোধন করে বপন করতে হবে৷ বিনা সরিষার বীজ ব্যাভিষ্টিন (২.৫ গ্রাম/ কেজি) বা বেনলেট (১.৫ গ্রাম/ কেজি) দিয়ে শোধন করতে হবে৷
বীজ বপন পদ্ধতি:
১. বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যায়। সারিতে বপন করলে লাঙ্গল দিয়ে নালা কেটে গর্তে বীজ ফেলে তা মাটি দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দিতে হবে।লাইন করে বুনলে সার, সেচ ও নিড়ানী দিতে সুবিধা হয়।
২. সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫ সেন্টিমিটার বজায় রাখতে হবে এবং সারিতে ৪-৫ সেন্টিমিটার বজায় রাখা দরকার।
৩. বীজ ছিটিয়ে বপন করলে ভালোভাবে মই দিয়ে বীজ ঢেকে দিতে হবে।
৪. গাছ বেশি ঘন হলে পাতলা করে দিতে হবে।
বীজের পরিমাণ ছিটিয়ে বপন ৭.০- ৮.০ কেজি/ হেক্টর
সারিতে বপন ৪-৬ কেজি/ হেক্টর
জমিতে আগাছা দেখা দিলে বীজ গজানোর ২০-২৫ দিনের মধ্যে নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
বপনের সময়:
বিভিন্ন অঞ্চলের তারতম্য এবং জমির জো অবস্থা অনুযায়ী টরি-৭, কল্যাণীয়া, সোনালী সরিষা, বারি সরিষা-৬, বারি সরিষা-৭ ও বারি সরিষা-৮ এর বীজ মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য কার্তিক মাস পর্যন্ত বোনা যায়। রাই-৫ এবং দৌলত কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত বপন করা যেতে পারে।
সরিষার জাত:
টরি-৭
ফসল বোনা থেকে পাকা পর্যন্ত ৭০-৮০ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্দতিতে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ফলন ৯৫০-১১০০ কেজি হয়। বীজে তেলের পরিমাণ ৩৮-৪১%। জাতটি রোগবালাই সহনশীল।
সোনালী সরিষা (এসএস-৭৫)
ফলে ৪ টি কক্ষ থাকে এবং প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ৩৫-৪৫ টি । বীজের রং হলদে সোনালী । বীজ গোলাকার।হাজার বীজের ওজন ৩.৫-৪.৫ গ্রাম এবং বীজে তেলের পরিমাণ ৪৪-৪৫%। গাছের কান্ড ও শিকড় শক্ত বলে অধিক সার ও সেচ প্রয়োগে গাছ নুয়ে পড়ে না।
কল্যাণীয়া (টিএস-৭২)
বীজ গোলাকার। হাজার বীজের ওজন ২.৫-৩.০ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ ৪০-৪২%। ফসল পাকতে ৭৫-৮৫ দিন সময় লাগে। উন্নত পদ্দতিতে চাষ করলে প্রতি হেক্টরে ১.৪৫-১.৬৫ টন ফলন পাওয়া যায়। কল্যাণীয়া জাতটি স্বল্প মেয়াদী উচ্চ ফলনশীল আগাম জাত।
দৌলত ( আর এস-৮১)
বপন থেকে তোলা পর্যন্ত ৯০-১০৫ দিন সময় লাগে। হেক্টর প্রতি ফলন ১.১-১.৩ টন। দৌলত জাত খরা ও কিছুটা লবনাক্ততা সহনশীল। বীজে তেলের পরিমাণ ৩৯-৪০%। জাতটি অলটারনারিয়া ব্লাইট রোগ সহনশীল।
বারি সরিষা -৬ (ধলি)
ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট এবং প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ২২-২৫ টি। হাজার বীজের ওজন ৩-৪ গ্রাম। বীজের রং হলদে। কান্ড ও শিকড় শক্ত হওয়ায় গাছ হেলে পড়ে না। পরিপক্ক ফল ফেটে গিয়ে বীজ ঝরে পড়ে না। ফল ও ফলের ঠোঁট তুলনামূলকভাবে লম্বা। বারি সরিষা -৬ (ধলি) পাকতে ৯০-১০০ দিন সময় লাগে। পরিমাণমত সার ও সেচ দিলে প্রতি হেক্টরে ১.৯-২.২ টন ফলন পাওয়া যায়। বীজে তেলের পরিমাণ ৪৪-৪৫%।
বারি সরিষা -৭ (ন্যাপাস-৩১৪২)
গাছের পাতা বোটাহীন ও তল মসৃণ । ফুলের পাঁপড়ির রং সাদা। প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৯০-১২৫ টি । ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট এবং প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ২৫-৩০ টি।
বারি সরিষা -৮ (ন্যাপাস-৮৫০৯)
ফুলের পাঁপড়ির রং হলদে। প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৯০-১২৫ টি, ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট । প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ২৫-৩০ টি। বীজের রং কালচে। হাজার বীজের ওজন ৩.৪-৩.৬ গ্রাম। ফসল পাকতে ৯০-৯৫ দিন সময় লাগে।বীজে তেলের পরিমাণ ৪৩-৪৫%। এ জাত অলটারনারিয়া ব্লাইট রোগ ও সাময়িক জলাবদ্দতা সহনশীল।
রাই-৫
প্রতি গাছে ৪-৬ টি প্রাথমিক শাখা থাকে। পাতা বোটাযুক্ত ও খসখসে। প্রস্ফুটিত ফুল কুড়ির নিচে অবস্থান করে।প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৯০-১২০। বীজে তেলের পরিমাণ ৩৯-৪০%।
বারি সরিষা -৯
এ জাতটি টরি-৭ এর চেয়ে শতকরা ১০-২৫ ভাগ বোশ ফলন দেয়। আমন ধান কাটার পর এবং বোরো ধান চাষের আগে। স্বল্প মেয়াদী এ জাতটি সহজে চাষ করা সম্ভব। বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪৩-৪৪ ভাগ। ফসল পাকতে ৮০-৮৫ দিন সময় লাগে। পরিমাণমত সার ও সেচ দিলে হেক্টরে ১.২৫-১.৪৫ টন ফলন পাওয়া যায়।
বারি সরিষা -১০
গাছের উচ্চতা ৯০-১০০ সেমি। প্রতি গাছে ৪-৬ টি প্রাথমিক শাখা থাকে। শাখা থেকে প্রশাখা বের হয়। পাতা হালকা সবুজ রংয়ের। পাতা বোটাযুক্ত ও খসখসে । প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ১০০-১২০ টি । ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট । প্রতি পলে বীজের সংখ্যা ১২-১৫ টি । বীজের রং পিঙ্গঁল । হাজার বীজের ওজন ২.০-৩.০ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৩ ভাগ। হেক্টর প্রতি ফলন ১.২৫-১.৪৫ টন। আমন ধান কাটার পর এ জাতটি নাবি জাত হিসাবে চাষ করা যায়।
বারি সরিষা -১১
হাজার বীজের ওজন ৩.৫-৪.০ গ্রাম। বীজের ওজন অন্যান্য রাই সরিষার চেয়ে বেশি। ফসল ১০৫-১১০ দিন পাকে। প্রতি হেক্টরে ২.০-২.৫ টন ফলন পাওয়া যায়। এ জাতটি দৌলতের চেয়ে ২০-২৫% বেশি ফলন দেয়। আমন ধান কাটার পর এ জাতটি নাবি জাত হিসাবে চাষ করা যায়। জাতটি খরা এবং লবনাক্ত সহনশীল। প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ১২-১৫ টি। বীজের রং পিঙ্গল।
বারি সরিষা -১২
হাজার বীজের ওজন ২.৬-৩.২ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ ৪৩- ৪৪%। ফসল ৭৮-৮৫ দিনে পাকে। প্রতি হেক্টরে ১.৪৫-১.৬৫ টন ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান কাটার পর স্বল্প মেয়াদী জাত হিসেবে চাষ করে বোরো ধান রোপণ করা যায়।
বারি সরিষা-১৩:
হেক্টর প্রতি ফলন ২.২০-২.৮০ টন। ফসল ৯০-৯৫ দিনে পাকে। বীজে তেলের পরিমান শতকরা প্রায় ৪৩ ভাগ।
বারি সরিষা -১৪
হাজার বীজের ওজন ৩.৫-৩.৯ গ্রাম। ফসল ৭৫-৮০ দিনে পাকে। প্রতি হেক্টরে ১.৪-১.৬ টন ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান কাটার পর স্বল্প মেয়াদী জাত হিসেবে চাষ করে বোরো ধান রোপণ করা যায়।
বারি সরিষা -১৫
হাজার বীজের ওজন ৩.২৫-৩.৫০ গ্রাম। ফসল ৮০-৮৫ দিনে পাকে। প্রতি হেক্টরে ১.৫৫-১.৬৫ টন ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান কাটার পর স্বল্প মেয়াদী জাত হিসেবে চাষ করে বোরো ধান রোপণ করা যায়।
বারি সরিষা -১৬
হাজার বীজের ওজন ৪.৭-৪.৯ গ্রাম। ফসল ১০৫-১১৫ দিনে পাকে। প্রতি হেক্টরে ২.০-২.৫ টন ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান কাটার পর বোরো ধান করে না এমন জমিতে এ জাতটি নাবি জাত হিসেবে চাষ করা যায়। এ জাতটি খরা ও লবনাক্ততা সহিষ্ঞু।
বারি সরিষা -১৭
হাজার বীজের ওজন ৩.০-৩.৪ গ্রাম। ফসল ৮২-৮৬ দিনে পাকে। প্রতি হেক্টরে ১.৭-১.৮ টন ফলন পাওয়া যায়। জাতটি স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় রোপা আমন-সরিষা-বোরো ধান শস্য বিন্যাসের জন্য উপযুক্ত।
বিনাসরিষা-৪
হাজার বীজের ওজন ৩.৫০-৩.৮০ গ্রাম। বীজের রঙ লালচে কালো এবং বীজে তেলের পরিমাণ ৪৪% । জীবনকাল ৮০-৮৫ দিন। সর্বোচ্চ ২.৪০ টন /হেক্টর ফলন পাওয়া যায়। তবে হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১.৭০ টন।
বিনা সরিষা-৭
জাতটি খরা এবং অল্টারনারিয়া জনিত পাতা ও ফলের ঝলসানো রোগ সহনশীল। বীজের আকার তুলনামূলকভাবে বড় এবং ১০০০ বীজের ওজন ৩.৫০-৪.২৫ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ ৩৬-৩৮%। জীবনকাল ১০২-১১০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ২.০ টন।
বিনা সরিষা-৮
বীজে তেলের পরিমাণ ৩৯-৪১%। জীবনকাল ১০০-১০৮ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ২.৪ টন।
বিনা সরিষা-৯
জাতটি অল্টারনারিয়া জনিত পাতা ও ফলের ঝলসানো রোগ এবং বৃষ্টিজনিত সাময়িক জলাবদ্ধতা সহনশীল। বীজে তেলের পরিমাণ ৪৩%। জীবনকাল ৮০-৮৪ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন গড়ে ১.৬০ টন।
বিনা সরিষা-১০
বীজে তেলের পরিমাণ ৪২%। জীবনকাল ৭৮-৮২ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ১.৫ টন।
জমি তৈরি : জমিতে জো আসার পর মাটির প্রকারভেদে ৪- ৬টি চাষ ও মই দিয়ে বীজ বপন করতে হয়। মাটিতে রসের অভাব হলে বীজ বপনের আগে হালকা সেচ দিতে হবে।
সার প্রয়োগ : হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ ছকে দেয়া হলো। এতে ফলন ২৫০০ পযর্ন্ত পাওয়া যেতে পারে। সার প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যাও করতে হবে।
সারের নাম সারের পরিমাণ (কেজি/হেক্টর)
উইরিয়া…………………২৬৫-২৮০ কেজি
টিএসপি………………. ১৭৫-১৮০ কেজি
মিউরেট অব পটশ…….. ৫০-৬৫ কেজি
জিপসাম……………….. ১৫০-১৯০ কেজি
বোরন……………………. ৭-৮ কেজি
ইউরিয়া সার অর্ধেক ও অন্যান্য সমুদয় সার জমি তৈরির সময় বাকি অর্ধেক ইউরিয়া গাছে ফুল আসার আগে উপরি প্রয়োগ করতে হয়। সার উপরি প্রয়োগের সময় মাটিতে রস থাকা দরকার।
সরিষার জমিতে সালফার (জিপসাম) প্রয়োগ উৎপাদন ৪০% পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
পানি সেচ চারা গজানোর ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে সেচ দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে বীজ বপনের ২০-২৫ দিনের মধ্যে একটি এবং তারপর ২০-২৫ দিন পর আরেকটি সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়।
পোকা দমন বিনা সরিষার বীজ ব্যাভিস্টিন (২.৫ গ্রাম ) বা বেনলেট (১.৫ গ্রাম) দিয়ে শোধন করতে হবে। অল্টারনারিয়া রোগের আক্রমণ বেশি দেখা দিলে ডায়াথেন এম ৪৫ বা রোভরাল স্প্রে করতে হবে। ফুল ধরা শেষ হলে ১৫ দিন পর পর দুবার স্প্রে করলেই হবে।
জাব পোকার আক্রমণ হলে ফলন কমে যায়। ফুলের কুড়ি আসা শুরু করলে এ পোকা আক্রমণ করে। এ ক্ষেত্রে ডাইমেক্রন ১০০ সিসি বা ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রভৃতি কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
পরাগায়নে মৌমাছি মৌমাছি সরিষা গাছের পরাগায়নের সাহায্য করে এবং এতে ফলন বৃদ্ধি পায়। তাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরিষা ফুলে প্রচুর মৌমাছি মধু সংগ্রহের জন্য বিচরণ করে।
ফসল সংগ্রহ সরিষা গাছে যখন ফল তথা সিলিকুয়া হলুদ রঙের হলে ফসল তুলতে হবে। মাটি নরম থাকলে গাছের গোড়া ধরে টেনে শিকড়সহ তোলা যায়। অন্যথায় মাটির উপরিভাগের গাছের গোড়া কেটে নিতে হবে। তারপর ভালোভাবে ৪-৫ দিন বীজ রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
সরিষা চাষে বোরন সার ব্যবহার
বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের মধ্যে সয়াবিনের পরই সরিষার স্থান। তবে তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে সরিষার চাষই প্রধান। প্রতি বছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়ে থাকে। যা থেকে প্রায় আড়াই লাখ টন সরিষা বীজ উৎপাদন হয়। এর হেক্টর প্রতি গড় ফলন প্রায় ৭৪০ কেজি। যা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরো বাড়ানো সম্ভব। এখানে উন্নত পযুক্তি বলতে উফশি জাত ব্যবহার, বপনের সময় ও পরে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করা এবং সার প্রয়োগের বেলায় সুষম মাত্রা অনুসরণ ও বোরন সার ব্যবহার করা। সরিষা চাষে বোরন সার ব্যবহার করলে ফলন শতকরা ১৯৮-২৩০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এ জন্য হেক্টরপ্রতি মাত্র ৩২০-৪৫০ টাকা খরচ করে অতিরিক্ত প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।