শরীয়তপুর: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চালু করা হয়েছে শরীয়তপুর জেলার সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন ভাসমান রেস্টুরেন্ট “ভাসমান খান রেস্তোরাঁ”। শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার শরীয়তপুর-চাঁদপুর জাজিহার সেতু সংলগ্ন পম নামক এলাকায় ৭২ বিঘার মাছের ঘেরে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই নান্দনিক ভাসমান রেষ্টুরেন্টটি গড়ে তোলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন খান বাবুল।
পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আরএমটিপি নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য এবং বাজারজাতকরণ উপ-প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতায় উক্ত উদ্যোক্তার মাধ্যমে ফিশারিজ বেইজড ইকোট্যুরিজম এর আওতায় এই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি গড়ে তোলা হয়। নির্মিত এই রেস্টুরেন্টটির নাম দেয়া হয় “ভাসমান খান রেস্তোরাঁ”। ড্রামের ওপর লোহার এঙ্গেল, তার ওপর কাঠের পাটাতন, খুটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে লোহার জিআই পাইপ। লোহার এঙ্গেলের ওপর রঙিন টিন দিয়ে করা হয়েছে ছাউনী। স্থানীয় কারিগররা এই রেস্টুরেন্টের ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ করেন। এছাড়া প্লেনশিট ব্যবহার করা হয়েছে নির্মাণ কাজে। নয়নাভিরাম এই রেস্টুরেন্টটিতে রয়েছে একটি কিচেন কক্ষ, ১টি পরিচালকের কক্ষ ও ৯ টি খাবার কক্ষ। রেস্টুরেন্টটিতে প্রবেশ করতে এবং এক কক্ষ থেকে আরেক কক্ষে যেতে কাঠের পাটাতন ব্যবহার করতে হবে দর্শনার্থীদের।
শরীয়তপুরে উল্লেখযোগ্য কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ভাসমান এই রেস্টুরেন্টটি ইতোমধ্যে অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। ভ্রমণপিয়াসু ও বিনোদনপ্রেমিদের জন্য এই সেতু সংলগ্ন মাছের ঘেরের আশেপাশে রয়েছে এক মনোরম পরিবেশ। এক বছর আগে শরীয়পুর-চাঁদপুর সড়ক সংস্কার করে জাজিহার সেতুটি নির্মিত হলে প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নারী পুরুষ, যুবক-যুবতী ও শিশুরা এখানে ঘুরতে আসেন। সেতু ও মাছের ঘেরটিকে কেন্দ্র গড়ে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে উঠতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে এই স্থানটি একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে এসডিএস এর পরিচালক বিএম কামরুল হাসান বলেন, জাজিহার সেতু নির্মানের পর শরীয়তপুর-চাদপুর সড়ক সংলগ্ন বিশাল আকৃতির এই মাছের ঘের দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ঘুরতে আসে। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা এসডিএস থেকে আরএমটিপি প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে ভাসমান রেস্টুরেন্ট, নৌকা ভ্রমণ ও বিনোদনমূলক ফিশিং কর্মকান্ডের মাধ্যমে ফিশারিজ বেইজড ইকোট্যুরিজম গড়ার লক্ষ্যে উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করি ও অন্যত্র একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করাই।সেখান থেকে উদ্ধুদ্ধ হয়ে তিনি ভাসমান এই রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করে। যা ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। আমরা আশা করছি, পুরোপুরিভাবে ফিশারিজ বেইজড ইকোট্যুরিজম এর কাজ সম্পন্ন হলে ভ্রমণপিয়াসুদের জন্য অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হবে এটি।
রেস্টুরেন্টটির পরিচালক খোকন খান বলেন, আমাদের শরীয়তপুরে উল্লেখযোগ্য কোন বিনোদন কেন্দ্র নেই বললেই চলে। এই নতুন বাইপাস সড়ক ও লেককে কেন্দ্র করে দূর দূরান্ত থেকে লোকজনের আগমন দেখে আমরা ব্যতিক্রম কিছু একটা করার চিন্তা করি। সেই চিন্তা থেকে এসডিএস এর পরামর্শ ও সহযোগিতায় এই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি গড়ে তুলি। শুধুমাত্র ভাসমান রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে আমাদের প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকী আছে। এখানে নৌকা ভ্রমন সহ আরও অনেক কিছু করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। ধীরে ধীরে সেটি করা হবে। এখানে ভ্রমণকারীদের জন্য মানসম্মত বিভিন্ন প্রকার মাছের তৈরি খাবার, চাইনিজ ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।