নয়াকৃষি ডেস্ক: সিরাজগঞ্জ বাজারে আসতে শুরু করেছে চরাঞ্চলের শীতকালীন সবজি এ বছর যমুনার চরাঞ্চল জুড়ে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। বাজারে সবজির দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তাছাড়াও এখানে উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর তীরবর্তী এবার সকল উপজেলা সহ ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪ শত মেঃটন,সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ১,৬৯০ হেক্টর, আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবারের ভারী বর্ষনের কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৩০৩ হেক্টর জমির।ক্ষতির পরিমান ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা। ক্ষতি হওয়া ফসলে মধ্যে মাসকালাই, মরিচ, রোপা আমন, পেয়াজ বীজতলা।
এবারের উৎপাদিত সবজির মধ্যে রয়েছে, সীম, মিষ্টি কুমড়া, শসা, লাউ, টমেটো, গাঁজর, শসা, ঢেড়স, পালংশাক, বেগুন, মুলা, লালশাক ও বরবটি। বিশেষ করে বন্যা পরবর্তীতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ঝুকে পড়েছে কৃষকেরা। তবে চৌহালী ও কাজিপুর উপজেলার ধুপুলিয়া, বাউশা, নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ি, মনসুরনগরসহ বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে এ লাভজনক সবজি চাষ বেশি হবে বলে আশা করছে কৃষকেরা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আলম জানান, তিনি এবার ৫০ শতক জমিতে আগাম জাতের লাউ, মুলা, কপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ করেছেন। ফলন এবং বাজারে সবজির দামও ভাল।
নাটুয়াপাড়ার কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি জেলার আমরা এখন বারো মাস হরেক রকম সবজি চাষাবাদ করে মোটা অংকের টাকা আয় করছি। যা আমাদের সংসারে সচ্ছলতা এনে দিয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত সবজি ক্রয় বিক্রিয়ের জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে উঠেছে সবজি আড়ৎ। সারাদেশের পাইকাররা এসে এখান থেকে সবজি কিনে নিয়ে যায়। জেলার বেশির ভাগ কৃষক তাদের জমি থেকেই উৎপাদিত সবজি খুচরা পাইকারের কাছে বিক্রি করেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, এ বছর সদর উপজেলায় ১,৬৯০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছে । ইতিমধ্যেই আগাম জাতের লাউ, ফুল কপি,মুলা জাতীয় সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগাম জাতের সবজির ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকেরা খুশি। আমরা কৃষি অফিস থেকে সবজি চাষিদের নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম মফিদুল ইসলাম জানান, এ জেলায় চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। উৎপাদিত সবজিতে কৃষকেরা লাভবান সহ সিরাজগঞ্জ জেলার কৃষি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে বলে জানান তিনি।