কৃষি ডেস্ক: শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের দুলুখন্ড গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জাকির হোসেন।বয়স ৫৩। সততা এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজেকে একজন সফল মৎস্যখামারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভালো মানের পোনা উৎপাদনের জন্য তিনি সকলের নিকট বেশ পরিচিত। সরকারি মৎস্য অফিসসহ দূর দূরান্তের অনেকেই প্রতি বছর তার কাছ থেকে মাছের পোনা সংগ্রহ করেন। জনাব জাকির হোসেনের বর্তমান অবস্থা ও পরিচিতি গর্ব করার মতো হলেও আজ থেকে ২০ বছর আগে তার জীবন চিত্র ছিল ভিন্ন রকম। এক সময় নিজে অন্যের খামারে কাজ করলেও এখন তার খামারেই ৪ জন মানুষ কাজ করেন।
চলতি বছরের জুন মাসে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন RMTP এর “নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ” উপ-প্রকল্প হতে এসডিএস তাকে দ্রুত বর্ধনশীল মাছের পোনা নার্সিং এর জন্য সহায়তা প্রদান করে। সহায়তার অর্থ ও নিজের অর্থে তিনি পদ্মা নদী উৎস (প্রাকৃতিক উৎস) হতে ৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করে নিজের পুকুরে ছাড়েন। সেই ডিম থেকে তার ৩ লক্ষাধিক পোনা উৎপাদন হয়। উৎপাদিত পোনার দুই তৃতীয়াংশ (দুই লাখ) তিনি বিক্রি করেছেন আর অবশিষ্ট অংশ নিজের পুকুরে চাষের জন্য রেখেছেন। বিগত সময়ে তিনি পোনা চাষ করলেও পুকুরে নেট (জাল) ব্যবহার করতেন না।
এ বছর আরএমটিপি উপ-প্রকল্প হতে তিনি উত্তম মৎস্য চাষ অনুশীলন বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও কর্মকর্তাদের পরামর্শে নার্সারি পুকুরের চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরে দেন। এতে তার পুকুরে সহজে সাপ, ব্যাঙ, পানকৌড়ি ইত্যাদি প্রানী ও বাইরের আবর্জনা ভিতরে ঢুকতে না পারায় পানি দূষিত হয়ে পোনা মারা যাওয়ার হার কমে যায়। ফলে তার উৎপাদিত পোনার সংখ্যা পূর্বের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ বছর তার ৪৮ শতাংশ পুকুরে পোনা উৎপাদনে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার টাকা আর এ পর্যন্ত তার বিক্রিত পোনার মূল্য ১,6০,০০০/- (এক লক্ষ ষাট হাজার) টাকা। খরচ বাদে তার মোট আয় ৭৫,০০০/ (পঁচাত্তর হাজার) টাকা এবং পুকুরে মজুদকৃত পোনা থেকে আরও প্রায় ৭৫,০০০/ (পচাত্তর হাজার) টাকা পাওয়া আশা করছেন তিনি। বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুধুমাত্র নেট ব্যবহারের ফলে বিগত বছরের চেয়ে তার এ বছরে পোনা বিক্রিতে অতিরিক্ত লাভ হয়েছে ২৪,০০০/- (চব্বিশ হাজার) টাকা । সামান্য একটু কৌশল অবলম্বনে তার পুকুরে পোনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন এবং এসডিএস’র প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।