কৃষি ডেস্ক: ইফাদ এর অর্থায়নে ও পিকেএসএফ এর সহযোগিতায় এসডিএস বাস্তবায়নে পেইজ প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা উপজেলায় প্রথমবারের মতো নিরাপদ সবজি চাষ উপ-প্রকল্পে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উপর ২৯ জন কৃষককে প্রদশনী দেয়া হয়। প্রদর্শনী সকল চাষি সফল না হলেও গ্রীষ্মকালীন পেয়াঁজ উৎপাদনে দু’জন চাষি শতভাগ সফল হয়েছেন। তাদের একজন হলেন কাচিকাটার চর জিংকিং এর বাসিন্দা নিরাপদ সবজি চাষি মতিউর রহমান সরদার। বয়স ৫৪। জীবন নির্বাহে তার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে কৃষি। কৃষি কাজ করেই তার ৫ সদস্যের সংসার চলে।
২০১৭ সালে ইফাদ এর অর্থায়নে ও পিকেএসএফ এর সহযোগিতায় এসডিএস বাস্তবায়নে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা উপজেলায় পেইজ প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ পদ্ধতিতে সাধারণ ও উচ্চমূল্যের সবজি চাষের মাধ্যমে কৃষকের আয়বৃদ্ধিকরণ উপ-প্রকল্পের কাজ শুরু হয় । মতি সরদার ২০১৮ সালে উক্ত প্রকল্পের সদস্য হন। প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ সবজি চাষ ও ভার্মি-কম্পোস্ট/জৈব সার ব্যবহারের উপর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে তিনি অংশ নেন। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তিনি নিরাপদ ও উচ্চমূল্যের সবজি চাষাবাদ শেখেন। প্রশিক্ষালব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে শুরুতে তিনি নিজ জমিতে ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ বোর্ড ও গোবর সার ব্যবহার করে শাক-সবজি চাষ শুরু করেন। এতে উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ায় সে বছর তিনি বেশ লাভবান হন এবং নিরাপদ পদ্ধতিতে সবজি চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। পরের বছর প্রকল্পের কর্মকর্তার পরামর্শে উচ্চমূল্যের স্কোয়াশ, ব্রোকলি চাষ করেন। এতে তিনি বেশ লাভবান হন। এরপর থেকে তিনি লেটুস ও ব্রোকলি চাষ করছেন।
এ বছর এসডিএস প্রকল্পের আওতায় ২৯জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেয়াঁজের বীজ, সার ও ওষধ ক্রয়ের জন্য নগদ অর্থ প্রদান করেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন মতিউর রহমান সরদার। তিনি প্রকল্পের সহায়তায় তাঁর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষের প্রদর্শনী স্থাপন করেন। অত্যধিক গরম ও বৃষ্টিতে কিছু চারা নষ্ট হয়ে যায়। বাকী চারা তিনি ১৫ শতাংশ জমিতে রোপন করেন। ঝড়,ঝঝ্ঞা, সিত্রাং হলেও সুনিবিড় পরিচর্যায় গাছ গুলো ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠে এবং পরিপূর্ণ পেঁয়াজে পরিনত হয়। অসময়ে উৎপাদিত তার এই পেঁয়াজ ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন মানুষ যায় এবং তার কাছে এ পেঁয়াজ সম্পর্কে জানতে চায়। তাঁর ১৫ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষে বীজ, সার ,ওষধসহ সর্বসাকুল্যে খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। আর তার ১৫ শতকে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪২ মণ। ১৮০০ টাকা মন দরে তিনি এ পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি করেন। এতে তার মোট লাভ হয় প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার নীট আয় প্রায় ৬৬ হাজার টাকা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তার দেখে অনেকেই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন। বীজ পেলে আগামীতে তিনি আরও বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।