নয়াকৃষি ডেস্ক: কুমিল্লা জেলায় এবারও মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরাও। জেলার সাতটি উপজেলায় এবার মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৫৯০ হেক্টর। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন চাষিরা। তবে স্থানীয় জাতের আলুর ফলনই বেশি হয়েছে বলে জানান আলু চাষিরা।
মিষ্টি আলুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেত জুড়ে চলছে মিষ্টি আলু তোলার উৎসব। রোদের তেজ উপেক্ষা করে পুরুষেরা কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে আলগা করছেন। আর মহিলা ও শিশুরা আলু কুড়িয়ে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখছেন। মিষ্টি আলু নিতে আসা ব্যাপারিরা ক্ষেতে বসেই আলু মেপে বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে নিয়ে রাখছেন। সন্ধ্যার সময় ট্রাকে করে এসব আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাবে।
একই গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া হোসেন, আবিদ মিয়া, তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আগে এসব জমিতে বাদাম ও মিষ্টি লাউ করতাম। এতে লাভ হাতো না। পরে এ বছর আমারা মিষ্টি আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। আগে যেখানে বাদাম ও মিষ্টি লাউ করে লোকসান হতো। এখন লাভের মুখ দেখে আমারা খুশি। আলু বিক্রি করতে আমাদের কোনো কষ্ট করতে হয়না। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে জমি থেকে আলু তোলার পর জমিতেই বিক্রি করে দেয়। পরে পাইকাররা এ আলু বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে জমা করে। সন্ধ্যার সময় ট্রাক ভরে আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে।
মিষ্টি আলুর পাইকার সোহেল মিয়া বলেন, কুমিল্লার মিষ্টি আলুর চাহিদা বেশি। কারণ ওই আলুগুলো বালু মাটিতে হওয়ায় মিষ্টি হয় খুব বেশি। ওই মিষ্টি আলুগুলো ঢাকায় ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। বৈশাখ মাস পর্যন্ত এ জেলা থেকে আলো নেয়া যায়। এরপর এলাকায় আর আলু থাকে না।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রশীদ বলেন, এ বছর মিষ্টি আলু উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জমির অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবং বর্তমান বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকরা খুশি।