নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে অনাবাদী জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উদ্ধুদ্ধকরণ সমাবেশ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসডিএস (শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি)।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) শরীয়তপুর জেলার শৌলপাড়ার ইউনিয়নের চর গয়ঘরে এসডিএস এর আয়োজনে কৃষক উদ্ধুদ্ধকরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান খাঁন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শরীয়তপুর খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মতলুবর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন এসডিএস’র পরিচালক (এমএফ) বিএম কামরুল হাসান বাদল।
এসডিএস’র কৃষি কর্মকর্তা ও নিরাপদ সবজি চাষ উপ-প্রকল্পের ভিসিএফ মোঃ আব্দুল মান্নান এর সঞ্চালনায় সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এসডিএস’র কৃষি কর্মকর্তা ইকোলজিক্যাল ফার্মিং উপ-প্রকল্পের ভিসিএফ শরিফুল আলম মনি, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম রুবেল প্রমুখ।
সমাবেশে এসডিএস’র পরিচালক (এমএফ) বিএম কামরুল হাসান বাদল বলেন, খাদ্য স্বয়ংসম্পুর্ন থাকতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত অনাবাদী ও পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসডিএস কাজ করে যাচ্ছে। আজকের এই সমাবেশে আপনারা যারা উপস্থিত হয়েছেন তাঁদের সকলকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলস্বরুপ নানামুখী সংকট দেখা দিচ্ছে। এই সংকট মোকাবেলায় এখন থেকে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি বলেন,আপনারা অনেকেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত এবং কৃষি কাজটাকেই আপনারা পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কিন্তু আগামী দিনে শুধু আবাদী জমিতেই নয় খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাড়ির আশপাশ থেকে শুরু করে সব জায়গায় ফসল ফলাতে হবে। কোন জায়গা ফাঁকা রাখা যাবে না। এজন্য সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যেকোন পরামর্শ বা সহযোগিতায় এসডিএস আপনাদের পাশে থাকবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার গত বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে, সেই নির্দেশনা দেন। কিন্তু করোনা মহামারি শেষ না হতে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার প্রভাব বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়তে শুরু করে। ফলে আগামী বিশ্ব কোন দিকে যাবে তা আমরা কেউই বলতে পারছি না। তবে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, নিজেদের খাদ্য খাদ ঘাটতি ও পুষ্টি চাহিদা নিজেদেরকে মেটাতে হবে। এজন্য কোন জমিই ফাঁকা রাখা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার আছে, যারা এখনো শাকসবজি ও ফলমূল কিনে খায়। অথচ চাইলে আপনারা বসতবাড়ির আঙিনা, পুকুর ও খালের পাড়, বাড়ির আশপাশ, স্যাঁতসেঁতে ছায়াযুক্ত প্রতি ইঞ্চি অব্যবহৃত ও অনাবাদি জমিতে শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করতে পারেন। যদি নিচু জমি হয় তাহলে বস্তায় মাটি ভরে তার উপর মাটি দিয়ে তাতে লাউ, সিম বা অন্যান্য লতাজাতীয় সবজি করে সেখানে মাচা দিয়ে সহজেই সবজি চাষ করা যায়। এভাবে প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সমাবেশ এসডিএস’র বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মকর্তা ও স্থানীয় শতাধিক কৃষক অংশ গ্রহণ করেন।