দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরে আগাম জাতের শীতকালীন সবজির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। বেশি লাভের আশায় সকাল থেকে দল বেঁধে তারা সবজির মাঠে কাজ করছেন।
দিনাজপুর সদরের নশিপুর সাত মাইল এলাকায় দেখা যায়, শীতকালীন আগাম জাতের ফুলকপি, বাধাকপি, শসা, মূলা, টমেটো, লাউয়ের ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের।
এছাড়াও, আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ, বিরামপুর, খানসামাসহ বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা। দিনাজপুরে গ্রীষ্মেও চাষ হয় শীতকালীন সবজি। বাজারে ভালো দামের আশায় তাঁদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক।
কাক ডাকা ভোর থেকে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে-মেশিন ইত্যাদি নিয়ে জমিতে হাল চাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শুধু নিজেদের চাহিদা মেটাতেই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের শুরুতে রাজধানাী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠায় কৃষকরা। আর এতে কৃষকও লাভবান হয়।
অনেক স্থানে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মূলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। এসব সবজি শীত নামার আগেই বাজারে আসতে শুরু করেছে। এখন বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক। তবে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে জেলার বিভিন্ন স্থানে কিছু সবজি চাষ ব্যাহত হয় এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। অনেকের চারাও নষ্ট হয়, তারা আবার চারা রোপণ করেছে।
দিনাজপুর নশিপুর সাতমাইল এলাকার চাষী এখলেচুর রহমান বলেন, দিনাজপুরে কয়েকদিন টানা বর্ষণ হওয়ায় মূলার শাকের আবাদ নষ্ট হয়েছে। সেই জমিতে পুনরায় চাষ করে আবার মূলার শাক চাষ করছি। এছাড়াও আমি ফুলকপি, বাধাকপি, লাউ, শশা, টমেটো চাষ করছি। জমিতে প্রতিদিন পরিচর্যা করছি। আশা করছি আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে আগাম জাতের ফুলকপি বাজারজাত করতে পারব।
একই এলাকার চাষি মামুনুর রহমান জানান, ২৫ শতক জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। প্রতিটি ফুলকপি গাছের চেহারা ভাল আছে। প্রতিদিন কোদাল দিয়ে গাছের গোড়ায় মাটি দিচ্ছি। পানির সেচের প্রয়োজন হচ্ছে না। কারণ জমিতে রস আছে। ইতোমধ্যে আমার ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ১ লক্ষ টাকার সবজি বিক্রি করা যাবে।
দিনাজপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস আসাদুজ্জামান জানান, দিনাজপুরের সদরের ঘুঘুডাঙ্গা, কাশিপুর, মহব্বতপুর, নশিপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় বেশি লাভের আশায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। এখন এই উপজেলাতে যে সবজি চাষ হচ্ছে তা রবি মৌসুম শুরুর আগেই করে থাকেন কৃষকরা। এই সবজি চাষে ফলনও ভালো হয়। সাধারণত কার্তিক মাসে শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়। এবছর ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এবং এর বিপরীতে ৭০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজির চাষ হচ্ছে। এতে করে চাষির অধিক লাভবান হচ্ছেন