নয়াকৃষি ডেস্ক: একজন সফল কৃষক গোপালগঞ্জের হানিফ মল্লিক (৪৩)। হানিফ মল্লি¬ক গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নকড়িরচর গ্রামের সাফায়েত মল্লিকের ছেলে। তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সে কৃষি কাজ শুরু করেন। পৈতৃক ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে হানিফের। তিনি ওই জমির পাশাপাশি আরো ২০৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে সারাবছর শাক,সবজি, ধান ও পাট চাষ করছেন। এছাড়া কচুরিপানার ভাসমান বেডে তিনি সবজি, পেঁয়াজ, মসলা ও ফল চাষ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চ জমিও আনাবাদি না রেখে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান জানান। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে পতিত জমি ও ভাসমান বেডে শাক-সবজি উৎপাদনে জেলার কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করছেন হানিফ । তিনি কৃষি কাজের ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা বিনিময় করছেন কৃষকদের সাথে। তাদের ভাসমান বেড ও অনাবাদি পতিত জমিতে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন।
কৃষক হানিফ মল্লিক বলেন, আমি ১৩ বছর বয়স থেকে কৃষি কাজ করছি। আমার মাত্র ২৫ শতাংশ জমি আছে। এছাড়া ২০৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে সারা বছর শাক, সবজি, ধান ও পাট উৎপাদন করছি।ভাসমান বেডে শাক,সবজি,তরমুজ, পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে লাভবান হয়েছি।আমার উৎপাদিত সবজি নিরাপদ, সুস্বাদু। তাই ক্রেতারা আমার সবজি একটু বেশি দামে কিনে নেয়। আমার উৎপাদিত সবজি আমি নিজেই প্রতিদিন বাজারে বিক্রি করি। পতিত জমি আবাদের আওতায় এনে সবজি চাষাবাদ করলে ধান, পাট বা অন্য ফসলের তুলনায় ২ থেকে ৩ গুণ লাভ হয়। আমি কৃষকদের পতিত ও ভাসমান বেডে শাক-সবজি আবাদ সম্পর্কে হাতে কলমে শেখাই।
নকড়িরচর গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস শেখ বলেন, হানিফ একজন আদর্শ কৃষক। তিনি সব সময় কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করেন। তাই তিনি সারা বছর অধিক ফসল ফলান।তাকে অনুকরণ করে কৃষিতে আমিও লাভবান হয়েছি।আমাদের নকড়িরচর গ্রামের চর এলাকার শতাধিক কৃষক তাকে অনুকরণ করে চাষাবাদ করছেন।এতে আমাদের চরের কৃষি বদলে গেছে।সার বছরই চরের জমিতে ফসল ফলছে। এ চরের কৃষকদের ভাগ্য বদলে হানিফ বড় ভূমিকা রেখেছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি গ্রামের কৃষক সমর মধু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এমপি। তাঁর আহবানে আমাদের এলাকায় পতিত ও আনাবাদি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ ও ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্প থেকে হানিফকে আমাদের কাছে আনা হয়েছে । পতিত জমি ও কচুরিপানার ভাসমান বেডে সবজি চাষে হানিফ আমাদের উদ্বুদ্ধ করছেন।তিনি চাষ পদ্ধতি ভালভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন। আমরা তাকে অনুকরণ করছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, হানিফ কৃষি কাজ করে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।এ কাজে তার সাফল্য ও অভিজ্ঞতা ব্যাপক।এছাড়া তিনি তার উৎপাদিত ফসল নিজে মার্কেটিং করেন। তার এ অভিজ্ঞতাকে কৃষকের গ্রহণ করে কৃষকরা পতিত ও জলাবদ্ধ জমি চাষাবাদ করে উপকৃত হচ্ছেন। কৃষির উন্নয়নে পরিশ্রমী কৃষক হানিফ মল্লি¬ককে আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আসছি। কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে আমাদের এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। #বাসস