নয়াকৃষি: চলমান আমন মৌসুমে প্রয়োজনীয় সেচ নিশ্চিতের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহসহ ছয়টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেচের প্রয়োজনে নতুন বিদ্যুৎসংযোগ প্রয়োজন হলে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নিশ্চিত করারও সিদ্ধান্ত এসেছে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে ভার্চুয়ালি আমন মৌসুমে প্রয়োজনীয় সেচ নিশ্চিতকরণে করণীয়বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সোমবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রিসভা বৈঠকে আমন মৌসুমে সেচের সুবিধা নিশ্চিতে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে এমন সিদ্ধান্তটিও আসে।
মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত নিলো কৃষি মন্ত্রণালয়।
সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-
>> সেচের প্রয়োজনে নতুন বিদ্যুৎসংযোগ প্রয়োজন হলে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নিশ্চিত করবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ অন্যরাও এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
>> সেচের সুবিধার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের বৃহৎ সেচ প্রকল্পগুলো চালু করেছে। অন্যগুলোও শিগগির চালু করবে।
>> উপজেলা সেচ কমিটি দ্রুত মিটিং করে সেচের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং সে অনুযায়ী সেচের ব্যবস্থা করা হবে।
>> আমনে বাড়তি সেচের জন্য কৃষকদের অতিরিক্ত খরচের বিষয়ে নগদ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয় বিবেচনা করছে।
>> বৃষ্টির অভাবে যারা ধানের চারা উৎপাদন করতে পারেননি, তাদের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিনামূল্যে চারা দেওয়া হবে।
সভায় কৃষিসচিব বলেন, এবার আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ লাখ হেক্টর, যার মধ্যে এরই মধ্যে ৪৭ লাখ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ ও সন্তোষজনক। বিশেষ করে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এ মাসের মধ্যে যাতে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন করা যায় এবং রোপণের পর অন্তত ৩০ দিন যাতে সেচ নিশ্চিত করা যায়, সেই লক্ষ্যেই আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে আমনের ক্ষতি পোষাতে পারবো। আমরা কৃষকের সঙ্গে থেকে, পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে করে খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রাখতে পারি।’
সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশী বড়ুয়া, বিএডিসির চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
আরএমএম/এএএইচ/এএসএম